এনসিটিবি জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২৩

সম্মানিত সুধী, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সকলে ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, “আমাদের শিক্ষার মধ্যে এমন একটি সম্পদ থাকা চাই যা কেবল আমাদের তথ্য দেয় না, সত্য দেয়; যা কেবল ইন্ধন দেয় না অগ্নি দেয়।”বিশ্বকবির এই উক্তির পরিপ্রেক্ষিতে বলতেই হয় যে গুণগত শিক্ষার বিকল্প কিছু নেই। প্রচলিত ধারার বিপরীতে গিয়ে গুণগত শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০২৩ সালের পাঠ্যসূচি হবে ভিন্ন আঙ্গিকে ভিন্নমানের। আমার আজকের এই অনুচ্ছেদে এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ এর জাতীয় শিক্ষাক্রম এবং পিডিএফ ফাইল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আপনারা যারা এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ এর জাতীয় শিক্ষাক্রম পিডিএফ ডাউনলোড করতে চান আমার আজকের এই অনুচ্ছেদ থেকে খুব সহজেই এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ জাতীয় শিক্ষাক্রম পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন বলে আশা করি।
এনসিটিবি জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২৩
মহাত্মা গান্ধীর একটি বিখ্যাত উক্তি “আছে আপনি নিজেই সেই পরিবর্তন হন যা আপনি সারা বিশ্বের মধ্যে দেখতে চান।”বিশ্বকে পরিবর্তন করতে হলে আমাদের নিজেদেরকেই পরিবর্তন করা উচিত। আর এই পরিবর্তন কেবলমাত্র গুণগত শিক্ষার মাধ্যমে সম্ভব। আর গুণগত শিক্ষার মান নির্ভর করে থাকে সম্পূর্ণ পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের হাতে। এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ এর পাঠ্যক্রমে আসতে চলেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। প্রচলিত পাঠ্যক্রমের তুলনায় বেশি বড় ধরনের একটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে ২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যক্রমে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই জাতীয় শিক্ষা সমন্বয় কমিটির এক সভায় নতুন পাঠ্যক্রমের রূপরেখাটির অনুমোদন দেয়া হয়।
পরীক্ষা ও মুখস্থনির্ভর পড়াশোনাকে কমিয়ে ক্লাসে ব্যবহারিক ও ধারাবাহিক মূল্যায়নে জোর দিয়ে পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞরা।শিক্ষা মন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি বলেছেন “সংবেদনশীল, জবাবদিহিমূলক একীভূত ও অংশগ্রহণমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নতুন শিক্ষা কর্মের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি, জ্ঞান, যোগ্যতা, মূল্যবোধ ও দক্ষতা বাড়াতে জাতীয় শিক্ষাক্রমের মূল ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে। যোগ্যতা নির্ধারণে শিক্ষার্থীদের প্রেরণা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা হচ্ছে। এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, উন্নত দেশে পরিণত হতে রূপকল্প ২০৪১ অর্জন এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রমের সংগতি রেখেই পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা হবে নতুন পাঠ্যবইয়ে।
এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান বলেন, ক্লাসে ব্যবহারিক ও ধারাবাহিক মূল্যায়নকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যে বিষয় যে শ্রেণিতে শেখা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেই বিষয় মুখস্থ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। সে কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ পড়ে যায়। আমরা সেই জায়গাটি নিয়েই কাজ করছি। বিষয়বস্তু কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে শিশুদের বইয়ের বোঝা কমে আসবে, পড়াশোনার চাপ কমবে, একই সঙ্গে পরীক্ষার চাপও কমবে।
এর আগে গতবছরের সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষা কমের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিলেন আমাদের প্রাণপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী ২০২৩ সালে প্রথম দ্বিতীয় ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণীতে এই শিক্ষাক্রম শুরু হবে। ধারাবাহিকভাবে ২০২৪ সালে তৃতীয় চতুর্থ অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে। এবং তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণী, ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণি এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে।
কেমন হবে এনসিটিভি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ জাতীয় শিক্ষাক্রম?
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার নাজুক অবস্থায় কাটিয়ে উঠতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বাংলাদেশের সমন্বয়ে এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ জাতীয় শিক্ষাক্রমে আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে এবং এর গঠনগত এবং অবকাঠামগত উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম ২০২৩। প্রচলিত শিক্ষাক্রম এর সাথে নতুন শিক্ষা কমের যে বড় প্রবর্তন গুলো লক্ষ্য করা যাবে তা নিচে তুলে ধরা হলো।
- জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন।
- জাতীয় শিক্ষা ক্রম রূপরেখা অনুযায়ী ২০২৩ সাল থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা থাকবে না।
- এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হবে শুধুমাত্র দশম শ্রেণীর পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে।
- একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে দুটি পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। বোর্ডের অধীনেই নেওয়া হবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর দুই পরীক্ষা এই দুই পরীক্ষার ফলের সমন্বয়ে এইচএসসির ফল চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে।
- ২০২৩ সাল থেকে শিক্ষার্থীরা দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন সিলেবাসে পড়বে। থাকবে না বিজ্ঞান মানবিক বাণিজ্য বিভাগ বিভাজন।
- নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার ক্ষেত্র হচ্ছে- প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ভাষা ও যোগাযোগ, গনিত ও যুক্তি, জীবন ও জীবিকা, সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, পরিবেশ ও জলবায়ু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি।
- প্রাক প্রাথমিকে শিশুদের জন্য আলাদা কোন বই থাকবে না।
এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ জাতীয় শিক্ষাক্রম পিডিএফ ডাউনলোড মানুষের অন্তর্নিহিত পরিপূর্ণ বিকাশই হলো শিক্ষা। ওঠো, জাগো, নিজে জেগে অপরকে জাগাও। স্বামী বিবেকানন্দের সাথে আমি আমরা সবাই একমত। মানসম্মত শিক্ষার জন্য প্রয়োজন মানসম্মত পাঠ্যক্রম। আর সকল ভুল-ভ্রান্তিকে ছাপিয়ে মানসম্মত শিক্ষাক্রমের পরিবর্তনই পারে গুণগতমান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ২০২৩ জাতীয় শিক্ষা কম আনতে চলেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। আপনারা যারা নতুন শিক্ষাক্রম সম্পর্কে পিডিএফ ফাইল অনলাইনে সার্চ করছেন বা করবেন বলে মনস্থির করেছেন তাদের জন্য আমার আজকের এই অনুচ্ছেদে এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ জাতীয় শিক্ষা কর্মের পিডিএফ ফাইল তুলে দিলাম। এই লিংক থেকে আপনারা খুব সহজেই এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক ২০২৩ জাতীয় শিক্ষাক্রম পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন।