টিপস

কিভাবে ফটো এডিট করতে হয়

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি সকলে ভাল আছেন। নিয়ে এলাম নতুন আরেকটি অনুচ্ছেদ। আজকের এই অনুচ্ছেদে আলোচনা করব কিভাবে ফটো এডিট করতে হয়। আপনারা অনেকেই আছেন যারা অনলাইনে সার্চ করে থাকেন কিভাবে ফটো এডিট করা শিখবেন। আশা করি আমার আজকের এই অনুচ্ছেদ থেকে আপনার ‘কিভাবে ফটো এডিট করতে হয়” এ সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।

ফটো এডিটিং কি

ফটো এডিটিং বলতে আমরা সাধারণত বুঝি কোন একটি ফটোকে বা ছবিকে ঘষামাজা করে বিভিন্ন ফিল্টার যোগ করে একটি নতুন ঝকঝকে ও আকর্ষণীয় রূপ দান করা। আপনারা যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ভূমিকা পালন করেন তাদের প্রত্যেককেই কমবেশি ফটো এডিটিং এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনার অভাবে আপনারা একটি ফটোকে সুন্দরভাবে এডিট করতে পারেন না। আমার আজকের এই অনুচ্ছেদে ফটো এডিটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ফটো এডিটিং কেন করব ?

বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করেন না এরকম ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া প্রায় দুষ্কর। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য কিংবা নিজের প্রোফাইল কে সুন্দর করার জন্য প্রয়োজন পড়ে সুন্দর একটি ফটো। আপনারা চাইলে খুব সহজেই নিজে নিজেই আপনার তোলা ফটোটি এডিট করে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন। কিভাবে ফটো এডিট করতে হয় এই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমার আজকের এই অনুচ্ছেদে তুলে ধরলাম।

ফটো এডিট করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ

আমাদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা আছে যে একটি ফটো এডিট করে আকর্ষণীয় করার জন্য একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকা আবশ্যক। কেননা ফটো এডিটিং বলতে আমরা শুধুমাত্র অ্যাডোবি ফটোশপকেই বুঝি। কিন্তু আদতে তা নয়। আপনি চাইলে আপনার হাতের স্মার্টফোনটির সাহায্যে খুব সহজেই আপনার তোলা ফটোটি এডিট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করতে পারবেন। তাই দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আপনার হাতের স্মার্টফোনটি নিয়েই আপনি বসে পড়ুন আপনার তোলা ফটোটি সুন্দর করে এডিট করার জন্য।

ফটো এডিট করার ভাল অ্যাপস বা সফটওয়্যার

ইতোমধ্যেই বলেছি যে ফটো এডিট শুধুমাত্র কম্পিউটারে নয় একটা ভালো স্মার্ট ফোনেও করা সম্ভব। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে স্মার্ট ফোনে কিভাবে একটি ফটোকে সুন্দরভাবে এডিট করা যায়। এজন্য আপনার প্রয়োজন পড়বে একটি ভাল মানের স্মার্টফোন এবং সেই সাথে আপনাকে লাগবে একটি ভালো মানের অ্যাপস বা সফটওয়্যার। আপনি চাইলে একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন তাতে করে আপনার ফটোর জৌলুস আরো বৃদ্ধি পাবে। যে সকল সফটওয়্যার বা এপ্স ব্যবহার করে আপনি সহজেই আপনার নিজ হাতে তোলা ফটোটি এডিট করে আকর্ষণীয় করতে পারেন সে ধরনের কিছু অ্যাপস নিয়ে নিচে আলোচনা করলাম-

ফটো এডিটিং অনলাইন কিংবা অফলাইন দুই ভাবেই করা সম্ভব। আপনারা যারা অনলাইনে ফটো এডিটিং করতে চান তাদের জন্য আমার সাজেশন হবে canva ফটো এডিটিং অ্যাপ। ক্যানভা ফটো এডিটিং

ফটো এডিট করার ভাল অ্যাপস বা সফটওয়্যার
ফটো এডিট করার ভাল অ্যাপস বা সফটওয়্যার

সফটওয়্যার এর সাহায্যে আপনি খুব সহজেই আপনার ফটোটিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন। এখানে অসংখ্য টেমপ্লেট দেয়া থাকে। যেকোনো একটি টেমপ্লেট ব্যবহার করে আপনার ফটোটিকে আপনি সাজিয়ে নিতে পারেন মনের মত করে। এছাড়াও canva থেকে আপনি অসংখ্য ফটো ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি চাইলে ক্রয় করেও সুন্দর সুন্দর ফটো ব্যবহার করতে পারেন।

এছাড়াও অফলাইনেও ফটো এডিট করার ভালো কিছু অ্যাপস বা সফটওয়্যার রয়েছে। ফটো এডিটিং করার সবথেকে ভালো অ্যাপস বা সফটওয়্যার হল Befunky যার সাজে আপনি সহজেই আপনার ফটোটিকে এডিট করতে পারবেন। অ্যাপটি ব্যবহার করে আপনি চাইলে আপনার ফটোটিকে ফিল্টার করতে পারবেন, চাইলে সাজিয়ে নিতে পারবেন, চাইলে সেখানে ড্র করতে পারবেন।

Befunky
Befunky

এছাড়াও ফটো এডিট করার জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন picsart অ্যাপটি। পিকচার্ট ব্যবহার করে অনলাইন এবং অফলাইন যেকোন ভাবেই আপনি ফটো এডিটিং করতে পারবেন। সুন্দর সুন্দর কিছু ফিল্টার এখানে টেমপ্লেট হিসেবে দেয়া থাকে। আপনি চাইলে এ সকল টেমপ্লেট ব্যবহার করে আপনার ফটোটিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন। চাইলে আপনার ফটোর সাথে একটি টেক্সট যোগ করে তার আকর্ষণীয়তা আরো বৃদ্ধি করতে পারেন।

এছাড়া আপনি ব্যবহার করতে পারেন Photogrid। আপনি চাইলে আপনার তোলা ফটোগুলোকে একত্রিত করে একটি কোলাজ তৈরি করতে পারবেন এই  অ্যাপের মাধ্যমে। এই অ্যাপটিতে ৩০০ টিরও বেশি টেমপ্লেট দেয়া আছে যা আপনি ফ্রিতেই পেয়ে যাবেন এমনকি এখানে রয়েছে ব্যাকগ্রাউন্ড কালার ফিল্টার কিংবা বর্ডার ইত্যাদির মত অনেক আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য।

আপনি যদি চান যে আপনার তোলা ছবিটি সবার চোখে একটা আলাদা আকর্ষণ তৈরি করুক তাহলে আপনাকে অবশ্যই সুন্দরভাবে ফটোটিকে এডিট করতে হবে। এজন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন Airbrush নামক অ্যাপ্লিকেশনটি। এই অ্যাপ্লিকেশনে আপনি চাইলে লাইফ ক্যামেরার মাধ্যমে আপনার মুখের দাগ কিংবা দাঁত কিংবা মুখের উজ্জ্বলতা পরিবর্তন করতে পারবেন এবং চাইলে আপনি আপনার মুখের একটি প্রাকৃতিক চেহারাও দিতে পারবেন। বলে রাখা আবশ্যক যে এয়ারব্রাস অ্যাপ এ সমস্ত বৈশিষ্ট্যগুলোই বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে।

এছাড়া আপনি ব্যবহার করতে পারেন pixlr ফটো এডিটিং। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি চাইলে আপনার ফটোটিকে ফটোশপের চেয়েও ভালো করে এডিট করতে পারবেন। এটিতে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম ফ্রিতে পাওয়া যাবে। আপনি চাইলে আপনার ছবিটি আরো ভালো করার জন্য অনলাইন থেকে বিভিন্ন টুলস ডাউনলোড করে নিতে।

এছাড়া আপনি ব্যবহার করতে পারেন Toolbuzz নামক একটি দুর্দান্ত ফটো এডিটিং অ্যাপ। এই অ্যাপটিতে google রেটিং বেশ ভালো। এখনো পর্যন্ত ১০ মিলিয়নের অধিক মানুষ এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেছে। Toolbuzz অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি চাইলে লেখা যুক্ত করতে পারবেন, কালার ইফেক্ট দিতে পারবেন এবং আপনার ছবিটিকে কেটে নিতে পারবেন। আপনি চাইলে ফিল্টার ব্যবহার করে আপনার চেহারাও পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন সেই সাথে এই অ্যাপের মাধ্যমে ছবির কোলাজ তৈরি করতে পারবেন।

অনেক সময় আপনার হাতের তোলা ছবিটি একটু ঘোলাটে বা ফ্যাকাসে ধরনের হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে BeautyPlus ফটো এডিটিং অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন। এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনি আপনার ছবিটিকে সুন্দর একটি লুক দিতে পারবেন। বর্তমানে বেশিরভাগ মেয়েদের কাছে এই বিউটি প্লাস অ্যাপ একটি জনপ্রিয় সফটওয়্যার।

মন্তব্য: সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে সুন্দর ছবি ব্যবহার করে নিজের প্রোফাইল অন্যের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা একটি কমন বিষয়। এজন্য নিজের হাতের তোলা ছবিটি নিজেই এডিট করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রাপ্ত আমার আজকের এই অনুচ্ছেদে তুলে ধরা হলো। আশা করি আমার এই অনুচ্ছেদ থেকে আপনারা আপনাদের প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান পেয়ে গেছেন। আমার লেখাগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। সেই সাথে চাইলে আমাদের অন্যান্য লেখাগুলো পড়ে আসতে পারেন। সাথে থাকুন, পাশেই থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *