টিপস

ছাত্রদের বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষকের বক্তব্য

আপনার স্কুলে যদি বিদায় অনুষ্ঠান উদযাপন হয়ে থাকে তাহলে আপনি শিক্ষক হিসেবে সেই বিধায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন। তাইতো আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা ছাত্রদের বিদায় অনুষ্ঠানের শিক্ষকের বক্তব্য তুলে ধরব। মূলত আজকের এই অনুষ্ঠানে আপনারা জানতে পারবেন কিভাবে স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠানগুলোতে খুব সুন্দর ভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করা যায়। আমরা সেই সকল টেকনিক আজকের এই অনুচ্ছেদে আপনাদের জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি আমাদের এই অনুচ্ছেটি আপনাদের ভালো লাগবে।

বিদায় অনুষ্ঠান হলো একটি উদ্বিঘ্নকর ঘটনা, যা কোন ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের জন্য করা হয় যখন তাদের কোন ব্যক্তি বা কোন কাজ থেকে বিদায় নেওয়া হয়। বিদায় অনুষ্ঠান আমাদের জীবনে অনেক জায়গা এসে দাঁড়িয়ে থাকে, যেমন পড়াশোনা, চাকরি, বাসা বা বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নেওয়া ইত্যাদি।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষকের বক্তব্য

বিদায় অনুষ্ঠান বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র বা ছাত্রীদের জন্য বিদায় অনুষ্ঠান, পদত্যাগের জন্য কোন কর্মচারীর বিদায় অনুষ্ঠান, কোন সংগঠনের সদস্যদের বিদায় অনুষ্ঠান ইত্যাদি।বিদায় অনুষ্ঠান হলো একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা যা একটি ব্যক্তি, সম্প্রদায় বা সংস্থা থেকে বিদায় নেওয়ার অবসরে উদ্বিগ্নতা ও মনস্থিরতা উৎপন্ন করে। একটি বিদায় অনুষ্ঠান অনেক মুহুর্ত থেকে প্রস্তুত হতে হয় এবং এটি একটি উদ্বেগপূর্ণ পরিস্থিতি হতে পারে।

বিদায় অনুষ্ঠান হলো একটি অনেক বিস্তৃত ইভেন্ট যা সাধারণত একটি ফর্মাল অনুষ্ঠান হয়। এটি সাধারণত স্বাগত কর্মসূচি, ভালবাসার বাণী, সংগীত ও কথোপকথন ইত্যাদি থাকে। একটি বিদায় অনুষ্ঠান একটি বিশেষ উপলক্ষ্য সম্পন্ন করে যা সাধারণত বিদায় নেওয়া ব্যক্তি বা সংগঠনের জন্য বিশেষ স্মরণীয় হয়।

Related Articles

ছাত্রের বিদায় অনুষ্ঠানের শিক্ষকের বক্তব্য

ছাত্রের বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় আপনাকে যে সকল বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে তার মধ্যে হল।

  • ছাত্ররা কিভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে তার দিক নির্দেশনা।
  • পরীক্ষার হলে সুশৃংখল ভাবে খুব সুন্দর ব্যবহার করবে তার দিকনির্দেশনা।
  • পরীক্ষায় যাত্রী কোনভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন না করে তার দিকনির্দেশনা।
  • পরীক্ষার আগে কিভাবে প্রস্তুতি নেবে সেটি ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
  • পরীক্ষার হলে যথা সম্ভব যথাসময়ে উপস্থিত হওয়ার দিকনির্দেশনা।
  • পরীক্ষার হলে প্রবেশের পূর্বে যাতে করে এডমিট কার্ডসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামতি সঙ্গে নিয়ে যায় তার দিক নির্দেশনা।
  • একজন শিক্ষক হিসেবে এই সকল বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার সময়।
  • বিদায় অনুষ্ঠানে মূলত বিদায় দেওয়ার জন্য উদ্বিগ্নতা থাকে। এটি সাধারণত শুরু হয় একটি প্রস্তাবনা দেওয়ার মাধ্যমে যেখানে সম্মানিত অতিথিরা বা বিদায় নেওয়া ।

ছাত্রের বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে বক্তব্য

যেতে নাহি দিব হায়

তবু যেতে দিতে হয়

তবু চলে যায়

আজকের বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত অত্র প্রতিষ্ঠান সম্মানিত প্রধান শিক্ষক মহাদয়, আমার সহকর্মী শিক্ষক ও শিক্ষিকা,  অশিক্ষক কর্মীবৃন্দ প্রতি রইলো আমার সালাম আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

সর্বোপরি আমার সামনে উপবিষ্ট মঞ্চের শোভা বর্ধন করে বসে থাকা প্রাণপ্রিয় ছাত্র-ছাত্রী দের প্রতি রইল হৃদয়ের গভীর থেকে অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি তাদের প্রতি।

বিদায় জিনিসটা বড়ই বেদনার।

বিদায় বড় কষ্টের,

তাই অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজ বলতে হচ্ছে আজ তোমাদের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমি মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ মন থেকে তোমাদের কখনোই চির বিদায় দিতে পারব না। তোমরা অত্র বিদ্যালয়ে বেশ কয়েকবছর যাবৎ পড়াশোনা করেছ। অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিটা আনাচে-কানাচে তোমাদের স্পর্শ বিদ্যমান। বিদ্যালয়ের প্রতিটা অঙ্গনে তোমাদের সংস্পর্শ স্মৃতি হয়ে থাকবে। আজ ইচ্ছে না থাকা সত্বেও তোমাদেরকে অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। আজকের এই বিদায় অনুষ্ঠান থেকে তোমাদের শারীরিক বিদায় হলেও অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বা অত্র প্রতিষ্ঠান অঙ্গন থেকে কখনোই তোমাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা সম্ভব নয়।

মনে রাখবে,  এই বিদায়, বিদায় নয়। এই বিদায়ে কোন এক জীবনের পদক্ষেপের পরিবর্তন । এই জীবনটা প্রবহমান নদীর মত। যা অবিরাম গতিতে এক সীমান্তের দিগন্তে ছুটে চলা। কবি রবার্ট ফ্রস্টের মত তোমাদের মনে রাখতে হবে “ Miles to go before i sleep “ অর্থাৎ ঘুমোনোর আগে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। বিগত কয়েক বছরে তোমাদের প্রতি আমাদের অকৃত্রিম ভালবাসা অর্পণ করেছি । কিন্তু মাঝে মাঝে প্রয়োজন অনুযায়ী তোমাদের প্রতি আমরা কঠোর হয়েছি। এই কঠোরতা তোমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি নির্মাণের  উদ্দেশ্যে ছিল। তোমাদের সেটি আমরা খুব সহজেই ভুলতে পারবোনা।

কোন বিদ্যালয়ে সবচাইতে বড় প্রদান সেটা হল ছাত্র-ছাত্রী অর্থাৎ তোমরা। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তোমাদের দারুণ দারুণ অবদান রয়েছে। তোমরা এই বিদ্যালয়ের জীবনের ইতিহাসে একটা দারুণ অংশ হয়ে থাকবে। তোমাদের এই বিদায় শুভ হোক এই আশা করি।  তোমরা নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করো। পরীক্ষার কয়েকদিন খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করো। শিক্ষকদের কথা মেনে চলো,  বাবা মায়ের কথা মেনে চলো। সকলকে সম্মান করো। উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করো।

তোমরা এই দেশ এবং জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তোমরাই আগামীদিনের এই দেশ তথা সমাজের পরিচালক। আমরা চাই তোমরা সফল হয়ে আমাদের অত্র বিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আন। পিতামাতা এবং এলাকাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করো। সুনাগরিক হও,  এবং সর্বোপরি তোমরা শিক্ষিত হও, ভালো মানুষ হও।

তোমরা হয়তো ক্লাসে ফার্স্ট সেকেন্ড কিংবা থার্ড হতে পারবে না, কিন্তু চাইলেই সবাই ভালো মানুষ হতে পারো। আর তোমরা ভাল পড়লেই একটা দেশ তথা একটি সমাজ তথা একটি রাষ্ট্র ভালো হবে। বিদায়ের এই শেষকালে মনে রেখো সফল হওয়ার জন্য দুটি জিনিস প্রয়োজন তার একটি হচ্ছে  “ স্বপ্ন বা মানসিক ইচ্ছে” আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে “কঠোর পরিশ্রম” এই দুটো জিনিস থাকলে তোমাদের কেউ আটকাতে পারবেনা। তোমরা সফল হবেই। অতএব বিদায়ের প্রাক্কালে আবেগঘন মুহূর্তে উপস্থিত সকলের দীর্ঘায়ু কামনা করি এবং তোমাদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল কামনা করে আজকের বিদায়ী বক্তব্য এখানেই শেষ করছি। তোমরা আমাদের জন্য দোয়া করো আমরাও তোমাদের জন্য দোয়া করি।  আসসালামু আলাইকুম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *