স্ট্যাটাস

ডেঙ্গুর লক্ষণ গুলো কি কি

১৭৭৯ সালের দিকে ডেঙ্গু জ্বর এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। পৃথিবীতে প্রত্যেক বছরেই 5 থেকে 50 কোটি মানুষ ডেঙ্গুজোড়া আক্রান্ত হয় এর থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষ রে প্রত্যেক বছরই মারা যায়। ডেঙ্গু জ্বর একটি মশাবাহিত রোগ। বিশ শতকের প্রথম ভাগে ডেঙ্গু ভাইরাসের উৎস এবং এর সংক্রমণ সম্বন্ধে বিশদভাবে জানেন বিজ্ঞানীরা।

ডেঙ্গু যার একটি মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত রোগ এই রোগটি মশার কামড়ে সংক্রমিত হয়। ডেঙ্গু জ্বর হলে মাথা ব্যথা ,বমি বমি ভাব ,এবং প্রচুর দুর্বল ও শরীরের গিরায় ব্যাথা অনুভব হয়। ডেঙ্গু জ্বরের কারণে পানি স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরে রক্তের অনুচক্রিকার পরিমাণ কমে যায়। রক্তের অনুচক্রিকার প্লাটিলেটে পরিমাণ কমে যাওয়ায় শরীরে রক্ত দিতে হয়। এডিস মশকী ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান কারণ। এডিজ ইজিপ্ট মশকী ডেঙ্গু ভাইরাসের মানুষের শরীরের সংক্রমিত করে ডেঙ্গু জ্বর রোগে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশী গ্রীষ্মকালে প্রত্যেকবারেই ডেঙ্গু মশার উৎপাত বাড়ে। ফলে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন সময় ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব পড়ে। এই জ্বরের কারণে রোগীকে ৭ থেকে ৮ দিন প্রচন্ড জ্বরে ভুগতে হয় প্রচুর মাথা ব্যাথা শরীরের ব্যথা ও পানি স্বল্পতার কারণে রোগীকে স্যালাইন দিতে হয় এবং রক্তশূন্যতার কারণে মাঝে মাঝে রোগীকে রক্ত  দিতে হয়।

একটি সচেতনতা বৃদ্ধি করলেই আমরা ডেঙ্গু জ্বরকে এড়াতে পারবো। এডিস মশা সাধারণত ময়লা আবর্জনা বদ্ধ পানিতে এদের প্রজনন বৃদ্ধি করে। তাই বাড়িতে আশেপাশে ঝোপ পরিষ্কার করতে হবে খাল বিল   পরিষ্কার করতে হবে এবং অতিরিক্ত পানি জমতে  দেওয়া যাবে না। এসব পানিতে এডিস মশার ডিম নিঁধানের জন্য রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করতে হবে।

ডেঙ্গুর লক্ষণ গুলো কি কি

মশাবাহিত এই রোগটি সাধারণত রোগীদের শরীরে সাধারণ জ্বরের চেয়েও অনেক তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হয়। শরীরের তাপমাত্রায় ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রী তাপমাত্রা পর্যন্ত উঠে। শরীর ব্যথা হয়, মাথা ব্যথা হয় চোখের পিছনে ব্যথা হয়  শরীরে লালচে দাগ হতে পারে। ক্ষুধা মন্দা সৃষ্টি হয়। শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম ঝরে যায় যার কারণে পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। অতিরিক্ত পিপাসা লাগে। প্রচুর দুর্বলতা অনুভব হয়।

Related Articles

ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গ

সাধারণত শিশুদের কিশোর কিশোরীদের মধ্যে এসব লক্ষণ খুব কম সময়ের জন্য দেখা দিতে পারে। এডিস মশা কামড় দোয়ার চার থেকে সাত দিন পর জ্বর আসে এবং এই জ্বর প্রায় ১০ দিনের মতো স্থায়ী হয়। সাধারণত হালকা সংক্রমের ক্ষেত্রে এসব লক্ষণ দেখা যায়।
১০৪ ডিগ্রি ফারমাইট পর্যন্ত জ্বর আসে হঠাৎ নিচে নামে। প্রচন্ড মাথা ব্যথা হয় ,বমি বমি ভাব হয়, শরীরের বিভিন্ন অংশের ফুসকুড়ি হয়, গ্রন্থি ফুলে যায় ,শরীরে ব্যথা আরো জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা ,ত্বকে সহজেই ক্ষত হয় ,ক্লান্তি লাগে এবং চোখের মনির পিছনে ব্যথা হয়।
অল্প বয়সের শিশু ও অল্প বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ খুব হালকা এবং খুব তাড়াতাড়ি রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।

বয়স্ক শিশুদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে লক্ষণ

বয়স্ক শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এসব লক্ষণ তীব্রভাবে প্রকাশ পায় এবং শরীরের মারাত্মক ভাবে ক্ষতি সাধন হয়। এসব লক্ষণ হল মাত্রাতিরিক্ত জ্বর আসে ,রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রক্তনালী থেকে রক্ত বের হয়, বমি প্রস্রাব এবং মল দিয়েও রক্ত আসে। ল্যাম্ফোটিক সিস্টেমের ক্ষতি হয় শরীরের রক্তের অনুচক্রিকার প্লাটলেট পরিমাণ কমে যায় ,প্রচন্ড শরীরে ব্যথা অনুভব হয় ও ঠান্ডা লাগে। নাক ও মাড়ি দিয়ে রক্তপাত ঘটে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে খুবই কষ্ট হয় এই লক্ষণগুলো মারাত্মকভাবে মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হয়।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি কি করতে হবে

ডেঙ্গু জ্বর একটি মশাবাহিত রোগ। এই রোগটি এডিস মশার কামড়ে সংক্রমিত হয়। এডিস  ইজিপ্ট ভাইরাসের কারণে ডেঙ্গু ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়। ডেঙ্গু জ্বর হলে আক্রান্ত রোগীকে আলাদা রেখে তার যত্ন সেবা করতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর হলে রোগীর যেসব করণীয় তা নিচে উল্লেখ করা হলো

  • ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর বিশ্রামে থাকতে হবে প্রতিদিন দৈনিক জীবনে যেসব পরিশ্রম করা হয় সেগুলো না করে বিশ্রামে থাকতে হবে। আক্রান্ত রোগীর পরিপূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন হয়।
  • প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে যেমন ডাবের পানি লেবুর শরবত ফলে জোস লাইন গ্রহণ করতে হবে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসার জন্য ওষুধ সেবন করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় কোন ওষুধ রোগীকে সেবন করা যাবে না। চিকিৎসকরা সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে প্যারাসিটামল প্রতিদিন খেতে দেয়।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে কখন ডাক্তার দেখাবেন

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী যদি উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা যায় তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। রোগীর প্রচন্ড অবস্থা খারাপ বমি করে এবং ভবিষ্যতে রক্ত আসে ও শরীরের প্রচণ্ড ব্যথা শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে অতি দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধ

ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত এই সংক্রমণ রোগের কোন টিকা আবিষ্কার হয়নি। ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধের একমাত্র মাধ্যম হলো জনসচেতন। ডেঙ্গু ভাইরাস কে প্রতিরোধ করতে হলে প্রচার সামাজিক সক্রিয়তা এবং জনস্বাস্থ্য সংগঠন ও আইনি প্রয়োগ করতে হবে। স্থানীয় শাসন ব্যবস্থায় মশা নিধনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সম্পদের সঠিক ব্যবহার করে নির্দিষ্ট স্থানে অপ্রয়োজনীয় এসব সম্পর্কে সঠিকভাবে রেখে আসতে হবে। পরিবেশের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রকে যেখানে সেখানে না ফেলে রেখে নির্দিষ্ট ব্যবহারের পর মাটিতে পুঁতে ফেলে রাখতে হবে। সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে। মানুষকে মশা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ শরীরে কাপড় পড়তে হবে এবং রাত্রে শোয়ার আগে মশারি ব্যবহার করতে হবে। পরিবেশের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা কয়েক দিনের বৃষ্টির পানি বা অপরিষ্কার পানিতে মশা বংশবৃদ্ধি করে তাই আমাদের পরিবেশকে ভালো রাখার জন্য সচেতনামূলক কাজ করতে হবে।

ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে আমাদের বাড়ির আশেপাশে যোগ যার ময়লা আবর্জনাকে দূর করতে হবে। পরিত্যক্ত ময়লা আবর্জনা ডাস্টবিন এবং ফুলের টপে অতিরিক্ত পানি জমাতে দেওয়া যাবে না। পুকুর ডোবা খালে রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করে এদের প্রজনন ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দিতে হবে। পরিবেশকে সুস্থ এবং সমৃদ্ধ করতে আমাদেরকে সচেতনামূলক কাজ করতে হবে তাহলেই আমরা ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *