ট্রেনের সময়সূচিভ্রমণ

ঢাকা থেকে কলকাতা ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়ার তালিকা ২০২৩

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা যাওয়ার জন্য ট্রেন সময়সূচী সহ বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আজকের এই অনুচ্ছেদ সাজানো হয়েছে। এক দেশ থেকে অন্য দেশে বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ যাতায়াত করে। বাংলাদেশ থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য রেলওয়ে পথে ব্যবস্থা রয়েছে। আজকের এই অনুষ্ঠানে ঢাকা টু কলকাতা কলকাতা ট্রেনের সময়সূচী ভাড়া ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে ভারতে কলকাতা যেতে দুটি ট্রেন চালু আছে। ট্রেন দুটি হল মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং বন্ধন এক্সপ্রেস। বিভিন্ন কাজে ব্যবসা-বাণিজ্য শিক্ষা চিকিৎসা এবং রাষ্ট্রীয় অনেক কাজে আমরা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে কলকাতায় বা কলকাতা থেকে ঢাকা যাতায়াত করি। ঢাকা থেকে কলকাতাগামী বা কলকাতা থেকে ঢাকগামী ট্রেন দুটি নিয়ম মত ঢাকা থেকে কলকাতায় যায়। দীর্ঘদিন করোনার কারণে ঢাকা থেকে কলকাতা রুটের চলাচলকারী ট্রেন দুটি বন্ধ হয়ে যায়। করোনার কারণে সাময়িকভাবে ঢাকা টু কলকাতা রেল সেবা বন্ধ হয়ে যায়।  এই মহামারির  পর দুদেশের মধ্যে আবারো যাত্রীবাহী ট্রেন দুটি চালু হয় । আজকের এই অনুচ্ছেদে ঢাকা থেকে কলকাতা ট্রেন সময়সূচী ভাড়া নিয়ে বিস্তার আলোচনা করা হয়েছে।

মৈত্রী এক্সপ্রেস

মৈত্রী এক্সপ্রেস বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দিয়ে চলমান একটি আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী ট্রেন এই ট্রেনটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা যাতায়াত করে। এই ট্রেনটি ২০০৮ সালে যদি এপ্রি ল দুই সপ্তাহিকের ট্রেন পরিষেবা চালু করা হয়। পরবর্তীতে ১৪ই এপ্রিল২০০৭ সালে বাংলাদেশে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে এই নিয়মিত ঢাকা থেকে কলকাতা পথে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে এই মৈত্রী ট্রেনটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন।

১৯৪৭ সালের পরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে কলকাতার গোলান্দা থাকা নারায়ণগঞ্জ এর মধ্যে বরিশালএক্সপ্রেস ইস্টবেঙ্গল এক্সপ্রেস ইস্টবেঙ্গল মে্ইল এই তিনটি ট্রেন চালু ছিল কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর ট্রেন দুটি বন্ধ ট্রেন তিনটি বন্ধ হয়। এর পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দিয়ে শুধু বাণিজ্যক্ষেত্রে মালামাল সেবার জন্য মালবাহী ট্রেন চালু ছিল। দীর্ঘ সময় পর ২০১৭ সালে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন হিসেবে মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু হয়।

Related Articles

মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচলকারী এটি আন্তর্জাতিক ট্রেন ।এ ট্রেনটির সপ্তাহে চার দিন ঢাকা থেকে কলকাতা রুটে চলাচল করে বুধবার শুক্রবার শনিবার এবং রবিবার। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল ৮টায় ছেড়ে কলকাতা চিতপুর স্টেশনে পৌঁছে বিকেল ৪ টায় । ট্রেনটি কলকাতা থেকে বাংলাদেশের ঢাকায় আসে সপ্তাহে চার দিন সোমবার মঙ্গলবার শুক্রবার এবং শনিবার যেটি কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে বাংলাদেশের ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌছায়। কলকাতা চিৎপুর স্টেশনে ছাড়ে সকাল ৭ঃ১০ মিনিটে এবং ঢাকা স্টেশনে পৌঁছায় বিকেল ৪টায় ৫ মিনিটে।

মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩

মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সপ্তাহে পাঁচ দিন কলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সপ্তাহে চার দিন চলাচল করে। দিনগুলো হল শুক্রবার, শনিবার, রবিবার, বুধবার।

অপরদিকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সপ্তাহে চারদিন কলকাতা থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দিনগুলো হল শনি সোম মঙ্গল এবং শুক্রবার।

যাত্রার স্টেশন ছাড়ার সময় গন্তব্য স্টেশন পৌছায়
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট সকাল ৮ঃ১৫ মিনিট
(বাংলাদেশ সময়)
কলকাতা বিকেল ৪ টা
(ইন্ডিয়ান সময়)
কলকাতা সকাল ৭ঃ১০ মিনিট
(ইন্ডিয়ান সময়)
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বিকাল ৪ঃ০৫
(বাংলাদেশ সময়)

মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়ার তালিকা ২০২৩

সম্পূর্ণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে।

মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করতে হলে একজন যাত্রীর অবশ্যই পাসপোর্ট এবং ভিসা সঙ্গে রাখতে হবে। সেইসঙ্গে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় টিকিটের সাথে ভ্রমণ কর পরিষদ করতে হবে। সবগুলো মিলে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়ার তালিকা দেওয়া হল।

এসি কেবিন ১৫২২ টাকা
ভ্যাট ৩৭৮ টাকা
ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ টাকা
মোট = ৩৪০০ টাকা

এসি চেয়ারঃ

এসি চেয়ার ১৭৪৮ টাকা
ভ্যাট ২৫২ টাকা
ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ টাকা
মোট= ২৫০০ টাকা

এসি কেবিন ২০১৫ রুপি
এসি চেয়ার ১৩৪৫ রুপি

প্রতিজনের জন্য ৫০০ টাকা করে কলকাতা টু ঢাকা ট্রাভেল ট্যাক্স দিতে হয় এই টাকাটা টিকিটের সঙ্গে যুক্ত থাকে

বন্ধন এক্সপ্রেস

বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার মধ্যে যাতায়াতকারী আর একটি আন্তর্জাতিক ট্রেন হল বন্ধন এক্সপ্রেস। ট্রেনটি মূলত বাংলাদেশের বিভাগের শহর খুলনা হতে কলকাতা পর্যন্ত যাতায়াত করে। দুই দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে এই ট্রেনটি চালু হয়েছিল।

বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩

বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাংলাদেশের খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে কলকাতা চিৎপুর রেলস্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।

এর আগে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতি বৃহস্পতিবার কলকাতা চিৎপুর রেল স্টেশন হতে সকাল ৭:১০ মিনিটে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।

রুট ট্রেন সংখ্যা দিন সময় রেক সূত্র
কলকাতা থেকে খুলনা ১৩১২৯ বৃহস্পতিবার কলকাতা ০৭:১০ সকাল (প্রস্থান)
পেট্রাপোল ০৮:৫৫ সকাল (প্রবেশ)
বেনাপোল ০৯:১৫ সকাল(প্রবেশ)
যশোর ১১:৩০ সকাল (প্রবেশ)
খুলনা ১২:৩০ দুপুর (প্রবেশ)
আইআর
খুলনা থেকে কলকাতা ১৩১৩০ বৃহস্পতিবার খুলনা ০১:৩০ দুপুর (প্রস্থান)
যশোর ০২:৩০ দুপুর (প্রবেশ)
বেনাপোল ০৪:০০ বিকাল (প্রবেশ)
পেট্রাপোল ০৪:২০ বিকাল (প্রবেশ)
কলকাতা ০৬:১০ সন্ধ‍্যা (প্রবেশ)
আইআর

বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের তালিকা ২০২৩

বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটির বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা খুলনা হতে কলকাতা চিৎপুর রেল স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াত করে। ২৫০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে এই ট্রেনটিতে প্রায় 5 ঘন্টা সময় লাগে। আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করার জন্য এই ট্রেনে ভ্রমণকারী সকল যাত্রীকে অবশ্যই পাসপোর্ট এবং ভিসা সঙ্গে রাখতে হবে। সেই সাথে টিকিটের সময় ভ্রমণ কর সংযুক্ত থাকায় এর নিম্নরূপ টিকিট মূল্য ।

  • AC কেবিন – ২৫২২ টাকা + ৩৭৮ টাকা (ভ্যাট)+ ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স = ৩৪০০ টাকা
  • AC চেয়ার – ১৭৪৮ টাকা +২৫২ টাকা ( ভ্যাট ) + ৫০০ ট্রাভেল ট্যাক্স = ২৫০০ টাকা।।

কলকাতা থেকে ঢাকাঃ

  • AC কেবিন – ২০১৫ রুপি
  • AC চেয়ার – ১৩৪৫ রুপি

শিশুদের জন্য ৫০% ডিস্কাউন্ট হবে যদি ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে বয়স হয়ে থাকে নতুবা ফুল ভাড়া দিয়ে টিকিট কাটতে হবে। পাসপোর্ট অনুসারে বয়স ধরা হয়ে থাকে।এখানে ডলার হিসেবে দেখানো হয়েছে তবে কিছু কম বেশি হতে পারে কারণ ডলারের রেট চেঞ্জ হতে পারে তবে সেটা সামান্য পরিমাণ কম বেশি হবে।

কলকাতা ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বুকিং সিস্টেম

ঢাকা টু কলকাতা ট্রেনের টিকিট বাংলাদেশের অনলাইন টিকিট প্ল্যাটফর্ম থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন হাতে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করা যেতে পারে।

এছাড়াও কলকাতার হাওড়া রেল স্টেশন হতে এবং কলকাতার চিৎপুর রেলস্টেশন হতে ঢাকা টু কলকাতা ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *