বাংলাদেশের সেরা ১০ কোম্পানি

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নেতৃত্ব দিচ্ছে বিভিন্ন ব্যক্তি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান যে রূপ ঠিক সেরূপ হচ্ছে বেসরকার ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান। আজকের এই অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের সেরা ১০ টি কোম্পানির সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। বাংলাদেশে অর্থনীতিতে যাদের অবদান ৪০ শতাংশ বেশি। এই সকল কোম্পানি প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যবসা করে থাকে । সেখান থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে বাংলাদেশ সরকার। তাই এই অনুচ্ছেদে আমরা বাংলাদেশের সেরা দশটি কোম্পানির সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দিব।
বসুন্ধরা গ্রুপ
বসুন্ধরা গ্রুপ বাংলাদেশের সব থেকে বড় কোম্পানি। বহুমাত্রিক এই প্রতিষ্ঠান শুরুতে আবাসন ব্যবসা দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে বিভিন্ন সেক্টরের এর ব্যবসা শুরু হয়েছে। ১৯৮৭ সালে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন এই গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সুবাহান। বর্তমান এই গ্রুপটি সিমেন্ট কাগজ টিস্যু, পেপার, ইস্পাত, এলপিজি গ্যাসের বোতলজাতকরণের পাশাপাশি আবাসন ব্যবসা সহ বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত। এই গ্রুপের বর্তমান বছরে আয় ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি।
মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ
মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিস বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি। বহুজাতিক এ কোম্পানিটি বর্তমানে বাংলাদেশের শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রাখছে। বিশেষ করে বিভিন্ন রাসায়নিক যেমন সিমেন্ট, ভোক্তা পণ্য, বীমা, সিকিউরিটিজ, ইউলিটি ইত্যাদি ক্ষেত্রে। মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিস ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় 14000 কোটি টাকার আমদানি নিয়ে দেশের শীর্ষ আমদানি কারক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি এর বাৎসরিক আয় প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার।
এ কে খান গ্রুপ
বাংলাদেশের সব থেকে বড় এই গ্রুপটি আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশের বৃহত্তম কোম্পানি। বহুজাতিক এই কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে। গ্রুপটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হলো আবুল কাশেম। এবং সালাউদ্দিন কাশেম খান এই কোম্পানিটির ব্যবস্থাপক পরিচালক ও সিইও। এই কোম্পানিটি মূলত বিদেশী বিভিন্ন উৎপাদিত পণ্য আমদানি এবং রপ্তানি কাজ করে থাকে। আয়ের দিক থেকে এই কোম্পানিটি বাংলাদেশের শীর্ষ।
যমুনা গ্রুপ
আমাদের এই তালিকার চতুর্থ অবস্থানে আছে যমুনা গ্রুপ। বহুজাতিক এই গ্রুপটি মূলত বিভিন্ন শিল্প গোষ্ঠীর সাথে জড়িত। এই কোম্পানিটি মূলত বস্ত্র রাসায়নিক, চামড়া, মোটরসাইকেল, মিডিয়া, ইলেকট্রনিক্স, ও টয়লেটস ইত্যাদি পণ্য আমদানি ও রপ্তানি এবং উৎপাদন করে থাকে। যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা কালীন জার্মান নুরুল ইসলাম বাবুল। ১৯৭০ সালে যমুনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিস প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান যমুনা ফিউচার পার্ক এবং দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার একমাত্র মালিক ও চেয়ারম্যান যমুনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ। যমুনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ এর বাৎসরিক আয় প্রায় ১০০ কোটি ডলারের উপরে।
স্কোয়ার গ্রুপ
বাংলাদেশের সুপরিচিত এই কোম্পানিটি ওষুধ শিল্পের সাথে জড়িত। বিভিন্ন ওষুধ উৎপাদন বাজারজাতকরণ ও বিপণের সাথে জড়িত স্কয়ার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশের পঞ্চম বৃহত্তম গ্রুপ। স্যামসন এইচ চৌধুরী স্কয়ার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। স্কয়ার গ্রুপ বর্তমান ওষুধ শিল্প ছাড়াও বিভিন্ন টয়লেটিস পণ্য উৎপাদন করে থাকে। এই গ্রুপটির বর্তমান বাৎসরিক আয় ১০০ কোটি ডলার।
আকিজ গ্রুপ
আকিজ গ্রুপ বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর একটি কোম্পানি। বহুজাতিক এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল টেক্সটাইল, তামাক, সিরামিক, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং, ঔষধ, ভোক্তা পন্য সহ আরো অনেক খাত রয়েছে। ২০০৯ সালে ৩৯০ মিলিয়ন ইউরো কর প্রদান করে এবং সর্বোচ্চ করদাতা হয়েছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানের মোট বাজেটের দুই শতাংশ দেশের জন্য দান করার রেকর্ড আছে এই গ্রুপটির।
১৯৯০ সালে এই গ্রুপটি প্রতিষ্ঠিত হয় প্রতিষ্ঠা কালীন চেয়ারম্যান ছিল শেখ আকিজ উদ্দিন। এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমান বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজে নিয়োজিত আছে। শিশু শ্রম ও নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করে আকিজ গ্রুপ। আকিজ গ্রুপ বর্তমানে ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি বাৎসরিক ইনকাম করে।এছাড়াও বাংলাদেশের টপ ১০ কোম্পানির মধ্যে আছে ATK গ্রুপ, বেক্সিমকো, ইউনাইটেড গ্রুপ ও সিটি গ্রুপ। পরবর্তী অনুচ্ছেদে আমরা এ সকল গ্রুপ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা করব।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমাদের এই অনুচ্ছেদটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।