বিশ্ব অনাথ দিবস তারিখ, ইতিহাস, বার্তা, উক্তি ও ছবি

বিশ্ব অনাথ দিবস । সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, সকলকে শুভেচ্ছা। বিশ্বের অন্যতম অসহায় একটি সম্প্রদায় হল অনাথ বা এতিম। অসহায় অনাথ সম্প্রদায়ের জন্য বিশ্বে আদৌ কি কোন বিশেষ দিবস রয়েছে? আপনারা অনেকেই অনাথ দিবস সম্পর্কে জানতে চেয়ে অনলাইনে খোঁজ করে থাকেন। আমার আজকের এই অনুচ্ছেদ অনাথ দিবস নিয়ে। আপনারা যারা অনার্স দিবস সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন আশা করি আমার আজকের এই অনুচ্ছেদ থেকে আপনাদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য পেয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ।
পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই মানব সভ্যতার ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। এই উন্নতি অনেকেই ব্যক্তি কেন্দ্রিকভাবে করে থাকে, অনেকে সমাজ কেন্দ্রিকভাবে, আবার অনেকে বৈশ্বিকভাবে। ব্যক্তি কেন্দ্রিক উন্নতিতে যারা বিশ্বাসী তারা সর্বদা নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখে। নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখতে গিয়ে অনেকেই তাদের সন্তানকে করে ফেলে এতিম। কিংবা অনেক পিতা-মাতা আছেন যারা অকাল মৃত্যুর কবলে পড়ে তাদের সন্তানকে করে জান এতিম। অর্পিতা কিংবা মাতার অনুপস্থিতিতে তাদের এতিম সন্তান হয়ে যান অসহায়। পড়ে যান নানাবিধ সমস্যায়। আর এ সকল পিতা-মাতাহীন এতিম সন্তানকে মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করানোর মতো খুব কম সংখ্যক মানুষকেই চিন্তা করতে দেখা যায়। যার ফলশ্রুতিতে এতিম বা অনাথরা বঞ্চিত হয়ে যায় মৌলিক অধিকার গুলো থেকে।
গোটা পৃথিবীতে অনাথদেরকে নিয়ে যে দু একজন মানুষ চিন্তা ভাবনা করেন তাদের ধারণা মতে বিশ্বের অন্যান্য সব বিষয়বস্তুর মত অনাথ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ একটি দিন থাকা প্রয়োজন। আর এই প্রয়োজনের তাগিদেই তারা নির্দিষ্ট একটি দিনকে বিশ্ব অনাথ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
বিশ্ব অনাথ দিবস কবে?
দিন যত গড়িয়েছে আধুনিক সমাজ তত উন্নত হয়েছে। তবে আধুনিক সমাজের অন্যতম একটি কলঙ্ক হল বিপুলসংখ্যক অসহায় অনাথ। গোটা পৃথিবীতে প্রায় কয়েক কোটি অনাথ বসবাস করে। বিপুল সংখ্যক এই অনাথ সম্প্রদায় তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। বঞ্চিত এই অনাথ সম্প্রদায়কে স্মরণ করার জন্য এবং তাদেরকে নিয়ে জনগণের মাঝে ভাবাবেগ তৈরি করার জন্য বিশেষ একটি দিনকে বিশ্ব অনাথ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এজন্য প্রতি বছর নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহকে বিশ্ব অনাথ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
celebrated on November 14
বিশ্ব অনাথ দিবসের স্ট্যাটাস
প্রগতিশীল অনেকেই আছেন যারা বিশেষ দিনগুলোকে সুন্দরভাবে উদযাপনের জন্য এবং জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সুন্দর সুন্দর স্ট্যাটাস দেয়ার পদ্ধতি খুঁজে ফেরেন। আমার আজকের এই অনুচ্ছেদে বিশ্ব অনার্স দিবস সম্পর্কে কিছু দিক নির্দেশনা দেয়া হলো। আশা করি আমার আজকের এই অনুচ্ছেদে বিশ্ব অনাথ দিবসের স্ট্যাটাস সম্পর্কে সুন্দর ধারণা আপনারা পেয়ে যাবেন। পৃথিবীতে অনাথ সম্প্রদায় নতুন নয়। পৃথিবী সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই পিতা-মাতাহীন এ সকল অনাথ সম্প্রদায় বিভিন্ন আশ্রয় বড় হয়ে আসছে। অনাথদের থাকার জন্য যে বিশেষ আশ্রয়স্থল তৈরি করা হয় তাকে বলা হয় অনাথ আশ্রম। পৃথিবীতে অনাথ আশ্রম নতুন কোন ধারণা নয়। এই পৃথিবীতে প্রায় খ্রিস্টপূর্বাব্দ ৪০০ বছরের আগে অনাথ আশ্রমের খবর পাওয়া যায়। আপনারা যারা অনাথ দিবস সম্পর্কে সুন্দর সুন্দর স্ট্যাটাস দিতে চান তারা চাইলে অনাথদের ইতিহাস, তাদের প্রাত্যহিক জীবনযাপন বিখ্যাত ব্যক্তিদের উক্তি এবং সুন্দর সুন্দর ছবি দিয়ে পোস্ট করতে পারেন। আমি নিচে কিছু বিখ্যাত ব্যক্তিদের অনাথ সম্পর্কে বিখ্যাত কিছু উক্তি তুলে দিলাম।
- দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন, “পুরুষের কখনো উচিত নয় কোন শিশুকে অনাথ অবস্থায় ফেলে চলে যাওয়া।”
- এতিমরা একমাত্র যারা তাদের পিতা বেছে নিতে পারে এবং তারা তাদের দ্বিগুণ ভালবাসে।
অ্যাডাম জনসন - কবিতা নীরবতার এতিম। শব্দ তাদের পিছনে অভিজ্ঞতা পুরোপুরি সমান.
চার্লস সিমিক - বিজয়ের হাজার বাবা আছে, কিন্তু পরাজয় এতিম।
জন এফ। কেনেডি - জীবনী হল, সহজভাবে, একাডেমিয়ার অনাথ।
নাইজেল হ্যামিলটন - একজন এতিমের মুখে আনন্দ নিয়ে আসে, অভিজ্ঞ লোকেরা ঈশ্বরকে তাদের কাছে নিয়ে আসে
- ঈশ্বর কোন সঙ্গীত ছাড়াই সন্তুষ্ট হন, উপশমকারী বিধবা এবং সাহায্যকারী এতিমদের ধন্যবাদের গান দিয়ে; প্রফুল্ল, স্বাচ্ছন্দ্য এবং কৃতজ্ঞ মানুষ।
বিশ্ব অনাথ দিবসের ছবি
বলা হয়ে থাকে অনাথরা অসহায়। পিতা মাতার অভাবে অনাথরা তাদের মৌলিক অধিকার বিশেষ করে খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা ইত্যাদি থেকে বঞ্চিত হয়। অনাথদের অসহায়দের কথা চিন্তা করে অনেক সামাজিক কর্মী বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়ে থাকেন। তারা বিভিন্নভাবে মানুষের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা উত্তোলন করে অনাথদের পিছনে ব্যয় করেন। অনেকেই আছেন যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনাথদের সম্পর্কে বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। আর প্রচার-প্রসারনের জন্য অন্যতম সেরা মাধ্যম হলো সুন্দর ছবি। আমার আজকের এই অনুচ্ছেদে বিশ্ব অনাথ দিবস সম্পর্কে কিছু ছবি দেয়া হল। আপনারা চাইলে এগুলো থেকে ধারণা নিয়ে আপনাদের কাজে লাগাতে পারেন।


বিশ্ব যুদ্ধ জনিত অনাথ শিশু দিবস
যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের অনেকেই মৃত্যুবরণ করে তাদের সন্তানকে করে গেছেন অনাথ। তাদের অনাথ সন্তানরা হয়ে গেছেন অসহায়। এ সকল অসহায় অনাথ শিশুদেরকে দেখভালের জন্য বিশ্ব নেতারা প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট দিনে বিশ্বযুদ্ধ জনিত অনাথ শিশু দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই লক্ষ্যে প্রতিবছর ৬ জানুয়ারি সারা বিশ্ব জুড়ে বিশ্ব যুদ্ধ জনিত অনাথ শিশু দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যাতে করে যুদ্ধাহত ব্যক্তিদের অনাথ শিশুরা তাদের মানসিক সংকট ও দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে সেইসাথে তাদের সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে একটা জনসচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং তারা যাতে অনাথ শিশুদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারে।
মন্তব্য: ইউনিসেফ এর সমীক্ষা মতে গোটা বিশ্বের উত্তর-পূর্বের দেশগুলোতে প্রায় ৯,০০,০০০ শিশু রয়েছে যারা সবাই শিক্ষা খাদ্য আশ্রয় বা যুদ্ধের ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। যদিও উন্নত দেশগুলোতে এই ধরনের অনাথ শিশুর সংখ্যা তুলনামূলক কম তবে যে দেশগুলোতে যুদ্ধ এবং এইডসের প্রকোপ রয়েছে সেখানে অসহায় অনাথ শিশুদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি সাম্প্রতিক দশকে সশস্ত্র সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের হতাহতের অনুপাত এতই পরিমাণ বেড়েছে এমনকি এই হতাহত মানুষের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশিই হচ্ছে শিশু। আর এ সকল ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের বাসস্থানের জন্য খুঁজে নিতে হয়েছে শরণার্থী শিবির। বিশ্ব অনার্স দিবস কিংবা বিশ্ব যুদ্ধ জনিত অনাথ শিশুদের দিবস বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে মর্মান্তিক এবং সংকটময় পরিস্থিতিতে শিশুদেরকে যত্ন নেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।