টিপস

মাতৃত্বকালীন ভাতা কিভাবে পাওয়া যায়?

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সকলে ভাল আছেন। আপনাদের দোয়ায় আমিও ভাল আছি। গর্ভবতী মায়ের মাতৃত্বকালীন ভাতা কিভাবে পাওয়া যায় এ বিষয়ে অনেকেই অনলাইনে সার্চ করে থাকেন।আমার আজকের অনুচ্ছেদে মাতৃত্বকালীন ভাতা কিভাবে পাওয়া যায় এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করব। আশা করি আপনারা যারা মাতৃত্বকালীন ভাতা কিভাবে পাওয়া যায় এ নিয়ে খোঁজ করছেন আমার এই অনুচ্ছেদ থেকে উপকৃত হবেন বলে আশা করছি। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

মাতৃত্বকালীন ভাতা

দরিদ্র পীড়িত বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খায়। কিছু না অধিকাংশ নাগরিকই তাদের শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বিকশিত করার লক্ষ্যে যা যা করণীয় তাতে ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশের শিশুরা অধিকাংশই অপুষ্টিতে ভুগে থাকে। অর্থভাবে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ব্যাহত হওয়া রোধ করার লক্ষ্যেই বাংলাদেশ সরকার গর্ভবতী মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন সরকারি ভাতা প্রদানের প্রচলন করে। এজন্য প্রতি ছয় মাস অন্তর ৮০০ টাকা হারে চার বার অর্থাৎ ২৪ মাস এই ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। কিছু নির্দিষ্ট নিয়মাবলী মেনে আবেদন করলে খুব সহজেই বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক মাতৃত্বকালীন ভাতার আওতাধীন হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন।

মাতৃত্বকালীন ভাতা ২০২৩ কত টাকা?

বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত একটি অন্যতম অনুদান মাতৃত্বকালীন ভাতা। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সরকার মাতৃত্বকালীন ভাতা হিসেবে প্রতি মাস ৮০০ টাকা হারে ছয় মাস অন্তর চারবার অর্থাৎ ২৪ মাস ভাতা প্রদান করে থাকে। একজন আবেদনকারী সর্বোচ্চ একবার অর্থাৎ দুই বছর মাতৃত্বকালীন ভাতা ভোগ করতে পারবেন। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে উপজেলা মঞ্জুরী কমিটির কাছে প্রদান করতে হবে।গর্ভবতী ভাতা মঞ্জুরি কমিটি সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব এবং সভাপতি এ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করবেন। আবেদনকারীর প্রদত্ত তথ্য এবং আবেদন পত্র সঠিকভাবে পূরণ করা থাকলে তখন সেই আবেদনটি মঞ্জুরী করা হয়ে থাকে। এজন্য আবেদন ফরম পূরণ করার সময় মাথায় রাখা জরুরী যে কোনভাবেই যাতে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া না হয় এবং প্রদত্ত তথ্যে যাতে কোনরকম ভুলত্রুটি পরিলক্ষিত না হয়।

মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন ফরম ২০২৩

বাংলাদেশ সরকার প্রতি গৃহীত অন্যতম একটি অনুদান মাতৃত্বকালীন ভাতা। প্রতিবছরই মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য আবেদন আহবান করা হয়। এজন্য নির্দিষ্ট তারিখের আগেই গর্ভবতী মায়েদেরকে নির্দিষ্ট কাগজপত্র এবং আবশ্যকীয় শর্তাবলী পূরণ করে অনলাইন এর মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করতে হয়। মাতৃত্বকালীন ভাতা ২০২৩ এর আবেদন ফরম পূরণের সার্কুলার বের হয়েছে। বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক যারা কিনা গর্ভবতী মহিলা প্রত্যেকেই এই ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনারা যারা গর্ভবতী মায়ের সরকারি ভাতা ২০২৩ এ আবেদন করতে চাচ্ছেন তাদেরকে আমার এই অনুচ্ছেদে স্বাগতম। মনে রাখতে হবে আবেদনকারী কে অবশ্যই গর্ভবতী হতে হবে। আপনারা যারা গর্ভবতী ভাতার আবেদন ফরম ২০২৩ পূরণ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এই লিঙ্কে ক্লিক করে গর্ভবতী ভাতার আবেদন ফরম ২০২৩ ডাউনলোড করে নিতে হবে।

গর্ভবতী ভাতা অনলাইন আবেদন

আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন এবং আপনি যদি মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদন করতে চান তাহলে আপনার জন্যই আমার আজকের এই অনুচ্ছেদ। গর্ভবতী ভাতা আবেদন করার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা পূরণ করতে হবে শর্তগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-

ক. প্রথম বা দ্বিতীয় গর্ভধারণকাল (যেকোনো একবার)

খ. বয়স কমপক্ষে ২০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে

গ. মোট মাসিক আয় ২,০০০/- টাকার নিম্নে

ঘ. দরিদ্র প্রতিবন্ধী মা অগ্রাধিকার পাবেন

ঙ. কেবল বসতবাড়ি রয়েছে বা অন্যের জায়গায় বাস করে

চ. নিজের বা পরিবারের কোনো কৃষি জমি, মৎস্য চাষের জন্য পুকু নেই

ছ. উপকারভোগী নির্বাচনের সময় অর্থাৎ জুলাই মাসে উপকারভোগীকে অবশ্যই গর্ভবতী থাকতে হবে

জ. প্রথম ও দ্বিতীয় গর্ভের সন্তান গর্ভাবস্থায় বা জন্মের ২ (দুই) বছরের মধ্যে মারা গেলে তৃতীয় গর্ভধারণকালে ভাতা প্রাপ্য হবেন

ঝ. একজন ভাতাভোগী জীবনে একবার ২ (দুই) বছর সময়কালের জন্য মাতৃত্বকাল ভাতা পাবেন

ঞ. কোনো কারণে সন্তানের মৃত্যু হলে অথবা গর্ভপাতের কারণে নির্দিষ্ট চক্র অসম্পূর্ণ থাকলে তিনি পুনরায় গর্ভবতী হলে পরবর্তীতে ২ (দুই) বছরের মাতৃত্ব ভাতা প্রাপ্য হবেন, যদি অন্যান্য শর্ত পূরণ হয়ে থাকে

উপরে বর্ণিত শর্তসমূহের মধ্যে কেউ ক, খ ও ছ সহ কমপক্ষে ৫ (পাঁচ)টি শর্ত পূরণ করলে তার নাম প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে এবং অধিকতর দরিদ্র অগ্রাধিকার পাবেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আবেদনকারীর তথ্য MIS অনলাইন সফটওয়্যারে এন্ট্রি করবেন।

মাতৃত্বকালীন ভাতা ২০২৩ এ আবেদনের জন্য যে সকল শর্তাবলী পূরণ করা অত্যাবশ্যকীয় তা হল-

১। ভাতাভােগীর বয়স ২০-৩৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।

২। প্রথম অথবা দ্বিতীয় গর্ভাবস্থা হতে হবে।

৩। ভাতাভােগীকে জুলাই/২০২৩খ্রিঃ এ ৪-৬ মাসের গর্ভবতী থাকতে হবে।

৪। আবেদন পত্রের সহিত ছবি ৩ কপি,নাগরিকত্বের সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে।

৫। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ অথবা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কর্তৃক গর্ভবতী/ প্রসুতি প্রত্যয়ন পত্র- ১ কপি।

৬। প্রত্যক উপকারভােগীর নিজ পছন্দের ও নিজ নামের ডিজিটাল অনলাইন ব্যাংক/এজেন্ট ব্যাংক/ মােবাইল ব্যাংক হিসাব নম্বর ও  মােবাইল নম্বর অবশ্যই থাকতে হবে।

উপসংহার: বাংলাদেশের দরিদ্র পীড়িত জনগোষ্ঠীর বিপুলসংখ্যক শিশুকে অর্থের অভাবে মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ব্যাহত হওয়া রোধ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আপনারা যারা মাতৃত্বকালীন ভাতা গ্রহণের আবেদন করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা এবং ডাউনলোড লিংক আমার আজকের অনুচ্ছেদে শেয়ার করলাম। আশা করি আমার এই অনুচ্ছেদ থেকে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *