শরৎকালের শুভেচ্ছা, উক্তি, স্ট্যাটাস

সম্মানিত সুধী, আশা করি সকলে ভাল আছেন। আপনাদের সকলের দোয়ায় আমিও ভাল আছি। আপনারা অনেকে শরৎকালের শুভেচ্ছা, উক্তি, স্ট্যাটাস সম্পর্কিত দিকনির্দেশনা জানতে চেয়ে অনলাইনে অনুসন্ধান করেন। আমার আজকের এই নিবন্ধ শরৎকালের শুভেচ্ছা, উক্তি, স্ট্যাটাস সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাজিয়েছি। শরৎকে বরণ করে নেয়ার জন্য শরৎকালের শুভেচ্ছা, উক্তি, স্ট্যাটাস ইত্যাদি তথ্যাদি পাওয়ার জন্য আমার আজকের নিবন্ধটি মনোযোগ সহকারে পাঠ করুন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
শরৎকালের শুভেচ্ছা
বাংলা বর্ষপঞ্জিতে ভাদ্র ও আশ্বিন এই দুই মাস মিলে শরৎকাল। শরৎকে পশ্চিমারা অটাম নামে ডেকে থাকে। অন্যতম অনুকূল একটি ঋতুর নাম শরৎকাল। বলা হয়ে থাকে, শরৎকালই হলো সবচেয়ে মধুময় ঋতু। এই ঋতুতে না থাকে গরমের আধিক্য, না থাকে শীতের প্রকোপ। বাঙালির অন্যতম জনপ্রিয় এই ঋতুতে বালুচরে দেখা যায় শুভ্র বর্ণের কাশফুল। চোখ জুড়ানো কাশবাগানে হাতের আলতো ছোঁয়া লাগিয়ে স্পর্শ অনুভব করতে বাঙ্গালীরা মরিয়া। এত মধুময় যে ঋতু তার আগমনে আমাদের আয়োজনের কার্পণ্য থাকে না।
এ বছরও চলে এসেছে শরৎকাল। ঝিরিঝিরি হালকা বাতাস কানে দোলা দিয়ে যেন বলতে চাইছে- শরৎ, সে যে এক অন্য ঋতু, সে যেন আমেজে মাতায়, এ যে শিউলির গন্ধে মাতায়, সবুজ ঘাসের আলো-আঁধারি শিশির ধাঁধায়। শরতের এহেন মধুমাখা স্পর্শে বিমুগ্ধ হয়ে কত কবি রচনা করেছেন কত কবিতা, কত উপন্যাসিক লিখেছেন কত উপন্যাস, কত শিল্পী এঁকেছেন মনমুগ্ধকর কত ছবি। তাইতো শরৎকে বরণ করে নিতে সদা প্রস্তুত বাঙালি। প্রিয়জনকে শরৎ কালের শুভেচ্ছা জানানোয় কার্পণ্য করা কি চলে? তাইতো আপনাদের সামনে শরৎকালের শুভেচ্ছা উক্তি নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম আমার আজকের এই নিবন্ধে।
শরৎকালের উক্তি
এসেছে শরৎকাল। শরতের তালে তালে মনকে রাঙিয়ে তুলতে মেতেছে বাঙালি। শরতের স্নিগ্ধ ছোঁয়া অনুভব করতে বেপরোয়া হয়ে ছুটছে মানুষ কাশবনে। কেউবা আবার ছুটছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতল গভীরে। যেন পাড়ি দিতে চাইছে তীর হারা এক প্রবাল সাগর। আনন্দে মন গেয়ে উঠছে- কাশফুল কে ভালবেসে ভরাই আমার মন, আমার মত এমন ভালোবাসে আর কয়জন! কাশফুল ও কাশফুল কোথা যাও তুমি? তোমাকে দেখার অপেক্ষায় আছে মোদের এই ভূমি। কাশফুল, নদীর পাড়, শরৎ এসব নিয়ে ফেসবুকে বা ইনস্টাগ্রামে স্ট্যাটাস না দিলে যেন শরৎ বন্দনা অপূর্ণ রয়ে যায়। তাইতো আপনাদের সামনে শরৎকালের বিখ্যাত কিছু উক্তি নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম। আপনাদের কাজ কি সহজ করার লক্ষ্যেই আমার এই প্রচেষ্টা।সাদা রঙের কাশ দিল আজ ছুটি কাশফুল সব আজ মহুয়ায় বন্ধি।
- প্রিয়! কাশফুলের পরতে পরতে গাঁথা আছে তোমার ওই নাম।
- সাদা রঙের কাশ দিল আজ ছুটি, কাশফুল সব আজ মহুয়ায় বন্ধি।
- পুচ্ছ তোলা পাখির মতো কাশবনে এক কন্যে,
তুলছে কাশের ময়ূর চূড়া কালো খোঁপার জন্যে। - তোমার হাতে বন্দী আমার ভালোবাসার কাশ,
তাই তো আমি এই শরতে তোমার ক্রীতদাস। - শরৎ সেজেছে কাশফুলে থরে বিথরে বালুচরে!
সাদা মেঘের শতদল উড়ছে অপরূপ নীলাম্বরে! - বাইরে স্যাঁতসেঁতে, আকাশ কাঁদছে, সূর্য উষ্ণ হয় না; সবকিছু এত কালো এবং সাদা, আমি ভাবছি কেন? হয়তো শরৎকাল!
- আমি কফি পান করি, শরৎ দেখি, বৃষ্টি শুনি আর প্রেমে বিশ্বাস করি না!
শরৎকাল নিয়ে কবিতা
শরতের বিমুগ্ধ সৌন্দর্যে বিমহিত হয়ে গেছে কত শত কবি। রচে গেছে কতশত কবিতা। তবুও যেন শরৎকালের বন্দনা শেষ হবার নয়। আপনাদের সামনে শরৎকালের বিখ্যাত কিছু কবিতা উপস্থাপন করলাম-
শরৎকাল
– আবু জাফর বিঃ
শুভ্রতার প্রতীক ভাদ্র ও আশ্বিন দুই মাস শরৎকাল,
নেই বর্ষার বিষন্নতা শুধু স্নিগ্ধতা প্রকৃতি শান্ত নির্মল।
সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে শুভ্র কাশের আঁচল উড়িয়ে,
শরৎ আসে প্রকৃতি হাসে শেফালিফুলের মালা দুলিয়ে।
নীল আকাশে চলছে ভেসে সাদা মেঘের ভেলা,
আপন মনে মেঘের সনে করছে লুকচুরি খেলা।
এমন পরিবেশে ঝিরঝির বাতাসে দোলে কাশবন,
প্রকৃতির ছন্দে শিউলি ফুলের গন্ধে ভরে যায় মন।
ঝিলমিলি রোদ শান্ত শরৎ স্নিগ্ধ রূপে প্রশান্তি আনে,
মন মাতোয়ারা ধবধবে রাতের স্নিগ্ধ জ্যোৎস্নার টানে।
সাদা কাশফুল শিউলি বকুল জ্যোৎস্না আলোছায়ায়,
নদীর তীরে বনের প্রান্ত জুড়ে অপরূপ শোভা ছড়ায়।
সোনালী আলোয় মেঘের জড়াজড়ি মৃদুমন্দ বাতাসে,
চিরসবুজ মাঠে প্রকৃতি হেসে ওঠে মুকুল ধানের শীষে।
চারপাশের শুভ্রতা বৃষ্টির ফোঁটায় ভেজায় ফুলের রেণু,
দিগন্তজুড়ে আঁকা সাতরঙা হাসিমাখা ফুটে ওঠে রংধনু।
কাশকন্যা
-শাওনাজ
শরৎ সেজেছে কাশফুলে
থরে বিথরে বালুচরে!
সাদা মেঘের শতদল উড়ছে
অপরূপা নীলাম্বরে!
ভাটির দেশে শুভ্র কাশবন
কেড়ে নিয়েছে মন,
নদীর তীর কত যে নিবিড়;
মন হয় উচাটন!
হাওয়ায় দোলে ফুলদল
উড়ে যেতে চায় সুদূরে;
মায়া-মমতায় আটকে আছে
পাশাপাশি অঙ্গাঙ্গীভাবে!
ফুলের মাঝে পাখীরা ওড়ে
প্রজাপতি নেচে চলে বাড়ি।
কাশকন্যাদের হাসির রেখায়
বিলীন হয়ে যায় পরী!
উদাসী আকাশ হাতছানি দেয়
ভাসাবে মেঘের ভেলায়!
সুরের ছোঁয়ায় মন রাঙাবে
মৃদুমন্দ পূবালী বায়!
শরৎপ্রাতে
-এ কে সরকার শাওন
ডিঙ্গা বেয়ে বর্ষা ডিঙিয়ে
অবির্ভূত শরৎ সকাল!
ধানের ক্ষেতে দুরন্ত হাওয়া
দুর্বিনীত তাল মাতাল!
স্নিগ্ধ শান্ত শীতল সকালে
কোমল আলোর প্রক্ষেপণ!
বিধাতার সৃজন অপরূপ ভুবন
প্রকৃতির বিমোহিত আস্তরণ!
পাখীর কূজন মনে অনুরণন
সুবর্ণ সূর্যের হাসি!
ভুবন মোহন প্রকৃতির রূপ
কে না মোরা ভালোবাসি!
সোনা রোদে চিকচিক
শিশিরসিক্ত দূর্বার ডগা!
সর্পাকারে ফনা তুলে
তেজী ঝিঙার আগা!
আকাশে উড়ি সারস সারি
পাতায় মেঘের সাথে মিতালী
কাশবনে মৃদুমন্দ বয়ে
তনুমন উন্মনা খেয়ালী!
হাঁটুজলে নিবিষ্ট মনে
মাছের ধ্যানে ধবল বক!
দোয়েল-কোয়েলের শীষে
মুখরিত ধরিত্রী জাঁকজমক!
শরত সকালে কাশ চামেলী
জুঁই ফুল কুড়ানোর ধুম!
শুভ্র সৌন্দর্যে মােহিত মন
শিশিরে শেফালী অনুপম!
সকলে সকালে উনুন ঘিরে
মায়ের পিঠার আস্বাদন;
বাঙালি এ ঐতিহ্য বিশ্বে বিরল
খুঁজে পাবে না ত্রিভুবন!
প্রতি সকালে স্ত্রীর কুন্তলে
জগলু আটে কাঠ গোলাপ!
সজনীর তরে সব ফুলাধারে
ব্যাথা বেদনার মনস্তাপ!
প্রফুল্ল চিত্তে কাজের নিমিত্তে
কৃষাণ চলে সাত সকালে;
ফসলের সম্ভাবনায় বেজায় খুশী
প্রশান্তিতে তনুমন দোলে!
নানান রংয়ের মানুষের ভীড়ে
গায়ের আড়ং জমজমাট!
কুয়াশা কাটলে গোপালপুর বিলে
চলে শাপলা কুড়ানোর ঠাট!
শরৎপ্রাতে আকাশ বাতাস
দূর্বাঘাসও সৌন্দর্য বিলায়।
বাংলা বাঙ্গালীর মন উচাটন
বাউল কবি গুনগুনায়!
পরিশেষ: বাংলার ষড়ঋতুর মধ্যে অন্যতম নাতিশীতোষ্ণ একটি ঋতুর নাম শরৎকাল। শরৎকালে নদীতে পাল তোলা নৌকা, কাশবনে ফুটে থাকা সাদা সাদা কাশফুল যে কারোরই মন ভরিয়ে দিবে মুহূর্তেই। তাইতো এই ঋতুকে বরণ করে নিতে এতটুকু কার্পণ্য নেই বাঙালির মনে। নানান ভাবে বরণ করে নিতে ব্যস্ত সবাই। শরৎকালের শুভেচ্ছা, উক্তি, স্ট্যাটাস ইত্যাদি বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় আমার আজকের এই নিবন্ধে উপস্থাপন করলাম। আমার এই কাজ আপনাদের যৎকিঞ্চিত উপকারে আসলে তবেই আমার সার্থকতা। আমাদের ওয়েবসাইটে নিত্যনতুন আপডেট তথ্য উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। চাইলে আমাদের সাইটটি ঘুরে দেখতে পারেন। সকলকে শরতের শুভেচ্ছা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।