স্কুল বিদায় বেলার বক্তব্য, বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য

আজকের এই অনুষ্ঠানে আমরা স্কুল থেকে বিদায় বেলার কিছু বক্তব্য আপনাদের জন্য শেয়ার করব। সামনে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগে প্রত্যেক স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে। তাই আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা স্কুল থেকে বিদায় বেলার কিছু বিদায় বক্তব্য এবং বিদায় অনুষ্ঠানে দেওয়ার মতো কিছু বক্তব্য আপনাদের মধ্যে শেয়ার করব। তাই আপনারা যারা বিদায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আমার এই অনুচ্ছেদটি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আশা করি আমার এই অনুচ্ছেদটি টি আপনাদের পছন্দ হবে ।
বিদায় অনুষ্ঠান হল একটি সামাজিক ইভেন্ট যা অনেক পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির পর একটি সম্পন্ন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়। এই ইভেন্টটি একটি সম্পর্ক বন্ধনের সমাপ্তি নির্দেশ করে এবং সামাজিক পরিবেশে অস্থিতিশীলদের সাথে একটি শুভচ্ছা দেয়ার জন্য হয়।
বিদায় অনুষ্ঠান বিভিন্ন ধরণের সম্পর্ক বন্ধনের জন্য অনুষ্ঠিত হতে পারে, যেমন বিবাহ, জন্মদিন, কলেজ এবং অফিস থেকে সরকারী নিয়োগে জন্য বিদায় ইত্যাদি।বিদায় অনুষ্ঠান একটি আনন্দময় ঘটনা যেখানে সবাই একসাথে আসমানী শুভকামনা দেয় এবং সাথে ভাগ হয়ে জীবনের নতুন প্রস্তাবনা গ্রহণ করে।
স্কুল বিদায় বেলার বক্তব্য
আমরা স্কুল জীবনের দীর্ঘ ১০ টি বছর অতিবাহিত করে থাকি। আমাদের জীবনের সবথেকে সোনালী মুহূর্তটি কাটে আমাদের স্কুল জীবনে। স্কুল জীবন থেকে যখন আমরা অনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় গ্রহণ করি তখন আমাদের প্রাণ ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে বিদায় অনুষ্ঠানে নিজেকে সামলিয়ে রাখতে পেরেছে। কারণ, স্কুল থেকে বিদায় নেওয়ার মুহূর্তরা সবার জন্য খুবই বেদনাদায়ক। এতকিছুর পরও আমাদের ভিতরে নিতে হয় জীবনে ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার জন্য। তাই এই অনুষ্ঠানে আমরা স্কুল থেকে বিদায় বেলার কিছু বক্তব্য আপনাদের জন্য তুলে ধরলাম।
আসসালামু আলাইকুম,
সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা দিয়ে শুরু করুন।
যেমনঃআলহামদুলিল্লাহ, সমস্ত প্রসংশা সেই মহান রাব্বুল আ-লামিন এর জন্য, অতপর স্বলাত ও সালাম বর্ষিত হোক রাসুল (সাঃ) এর উপর।
অন্য ধর্মের লোকেরা তাদের নিজেদের প্রসংশার বানী ব্যবহার করবেন।
মঞ্চে উপস্থিত প্রধান অতিথি এবং আমার শ্রদ্ধেয় সকল শিক্ষক ও আমার সামনে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীদের আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
প্রিয় উপস্থিতি আজ অত্যান্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমি “আব্দুল্লাহ” উপস্থিত হয়েছি আজকের ২০২৩ এর এই বিদায় অনুষ্টানে। যদিও আমরা মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না।
অনেক দিন ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করছি এবং এই প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয় অত্যান্ত দক্ষতার সাথে পড়িয়েছেন তা আমাদের মনে থাকবে সারা জীবন ।এজন্য আমরা আমাদের শিক্ষকগনের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো।
এখানে আপনি চাইলে আপনার শিক্ষদের সাথে ঘটে যাওয়া ছোট্ট ঘটনা যুক্ত করতে পারেন।
ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে আজ অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। আজ শিক্ষাজীবনের একটি অধ্যায় সমাপ্ত। পরের আরেকটি নতুন অধ্যায়ে পা রাখার উদ্দেশ্যে আমরা বিদায় নিচ্ছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি।
আমরা এখানে দীর্ঘ শিক্ষাজীবনে আপনাদের অনেক শাসন-বাড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এই শাসন সাময়িক বিরক্তিকর মনে হলেও এখন এই শেষ মুহূর্তে বুঝতে পারছি এটা আমাদের জন্য কতটা প্রয়োজন ছিলো। তাই আমাদের কোনো আচরণের যদি কোনো শিক্ষক শিক্ষিকা কষ্ট পেয়ে থাকেন, বা ছোট কিংবা বড় কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা করবেন।
সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে ক্ষমার আবেদন প্রার্থী।
যাই হোক, বিদায়ী মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলতে চাই না, এই প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে,আসসালামুয়ালাইকুম।
বিদায় অনুষ্টানের ব্যবহার করার মত ছন্দঃ
” যেতে নাহি দিতে চাই,
তবু যেতে দিতে হয়
তবু চলে যায়। ”
“যেতে হবে বহুদূর! তাই এই বাঁধন ছাড়া
বিরহ ভরা মনে, বইছে হাসির কাদন।
তাই আজ ছেড়ে চলেছি সকল মায়া সুসাশন,
সামনে দাড়িয়েছে তাই দিতে বিদায়ী ভাষণ।”
“বিদায়ের ঘন্টা বেজে গেছে
আর যে সময় নেই,
ভালো থেকে প্রিয় বিদ্যালয়
তোমাকে বিদায়”
” বিদায়ের বেদনায়
জলে ভেজা চোখ,
দৃষ্টিতে তবু তুমি
চেয়ে থাকি অপলক ”
শ্রদ্ধায় করি অবনত শির
আপনাদের বন্দনায়,
আমরা যেন উজ্জীবিত হয়ে
আপনাদের চেতনায়। ”
বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য
আপনি যদি বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য রাখার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার প্রস্তুতি আরও আমরা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই অনুচ্ছেদটি সাজেছি। এই অনুচ্ছেদে বিদায় অনুষ্ঠানে দেওয়ার মতো কিছু বক্তব্য আপনাদের জন্য শেয়ার করব। আশা করি আমার এই অনুচ্ছেদে ঈশ্বর কিন্তু বিদায় অনুষ্ঠানে দেওয়ার মতো কিছু বক্তব্য আপনারা খুব সহজে সম্ভব হতে পারবেন।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। অদ্যকার স্কুল কর্তৃক আয়োজিত এসএসসি পরীক্ষার্থী ২০২৩ সালের বিদায়ী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপবিষ্ট সম্মানিত সভাপতি, অভিভাবক।
সামনে উপস্থিত শ্রদ্ধেয় এবং প্রাণের ছোট-বড় শিক্ষার্থী ভাই ও বোনেরা। সকলের প্রতি রইলো আমার আন্তরিক সালাম ও অভিবাদন।
” বিদায়ের বেদনায়
জলে ভেজা চোখ,
দৃষ্টিতে তবু তুমি
চেয়ে থাকি অপলক ”
হে স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠঃ তুমি কত সুন্দর দৃষ্টিনন্দন জানিনা । তবে তোমার সু- ক্ষ্যাতি অঞ্চল ব্যাপী। তোমার মত স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত। তোমার যে মনোরম পরিবেশ অবস্থান, কোমলমতি পাঠদান তা আমার অন্তরে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
সম্মানিত শিক্ষক মন্ডলীঃ জানার ব্যাপারে আপনারা ছিলেন মহীরুহ বৃক্ষ। শিখনের ক্ষেত্রে আপনাদের ছিলো আমায় কথায় প্রকাশ। সদ্য ডিম থেকে ফুটে ওঠা বাচ্চা পাখির মুখে যেমন মা পাখি মুখে খাবার তুলে খাওয়ায় উড়তে না শেখা পর্যন্ত, , আপনারা ঠিক আমাদের তেমন করেই শিক্ষা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছেন । আপনাদের এই মাতৃসুলভ আচরণ আজীবন মনে থাকবে প্রিয় অভিভাবক। একজন জন্মদাতা পিতা মাতা যেমন তার সন্তানদের হাত ধরেপথ চলতে শিখায় , সেই হাঁটতে শিখানো হাতটা আপনাদের হাতে এসে নিশ্চিন্তে ছেড়ে দেয়। এর চাইতে আর কোন বড় অভিভাবক থাকতে পারে?
” শ্রদ্ধায় করি অবনত শির
আপনাদের বন্দনায়,
আমরা যেন উজ্জীবিত হয়ে
আপনাদের চেতনায়। ”
আপনাদের ভালোবাসা এবং নৈতিক শিক্ষায় আমাদের নির্ভীক করে তোলে। এরপরেও অনেক সময় আমরা আপনাদের মূল্য বুঝিনা। না বুঝে অনেক সময় অনেক বেয়াদবি করে ফেলি , শেখার ক্ষেত্রে থাকে অনীহা। আপনারা সামান্যতম কষ্ট না নিয়ে আমাদের আলোর পথের পথিক বানাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। বিদায় ক্ষণে আমাদের পুরাতন দিনের ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এই কামনা করি। আমরাও কোনদিনও আপনাদের ভুলবো না।
প্রিয় সহপাঠীঃ কি যে কোথা থেকে এসে এত প্রিয় হয়ে উঠেছিলাম তা আজ মনে নেই । শুধু মনে আছে অসংখ্য স্মৃতি ঘেরা মুহূর্ত । যা অবলীলায় চোখের সামনে ভেসে উঠছে আজ। কবে যে কখনও হয়েছিলাম আপন আজ আর মনে নেই।
তবে কেন যেন হচ্ছে মনে, দেহ থেকে প্রাণ টাকে দিয়ে দিচ্ছি বিদায়। যদিও এ বিদায় কালের যাত্রা , সময়ের একান্ত চাওয়া মাত্র। আমাদের এই বিদায়ে শুধুমাত্র স্থান পরিবর্তনের। অন্তঃকরণে আমরা সবাই একত্ব। যে যেখানেই থাকি না কেন মনের সুতায় গেথে থাকবো।
স্নেহের ছোট ভাই ও বোনেরাঃ
” কি বলিব আজ তোমাদের তরে,
পুরনো অনেক স্মৃতি আজ শুধুই মনে পড়ে। ”
তোমাদেরকে কতটুকু পেরেছি জানি না তোমাদের থেকে পেয়েছি শ্রদ্ধার্ঘ্য সাজ সেগুলি মনে পড়ছে আজ। চলার পথে দীর্ঘ পথচলা যখন, তখন তো ছোটখাটো ভুলত্রুটি ভেদাভেদ থাকতেই পারে। আজ সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে তোমাদের নিকট ক্ষমার হাত বাড়িয়ে দিলাম। আর তোমাদেরকেও ক্ষমা করে দিলাম। এ সময় এসে তোমাদের জন্য থাকলো অফুরন্ত ভালোবাসা ও শুভকামনা। তোমরাও আমাদের সফলতার জন্য দোয়া রাখবে।
প্রিয় পথপ্রদর্শকঃ
” সমুখে যারা জ্বেলেছে মশাল
শিক্ষার তরণীর,
আলোর পথের পথিক তারা
শিক্ষিত ধরণীর।”
হে অগ্রজঃ আপনাদের ভালোবাসার কাছে আজ আমরা অনেকটা ঋণী। তার চেয়ে বেশি রিনি আপনাদের প্রদর্শিত পথের কাছে। আমরা যেন সেই পথ পাড়ি দিয়ে ঋণ মুক্ত হতে পারি। আমরা ছোটরা অনেক সময় বড়দের সাথে ভুল করে থাকি। কিন্তু বড়দের কোন ভুল থাকে না ছোটদের কাছে। কারণ তাদের সবকিছুই শিক্ষণীয়। তাই আমাদের ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর আমাদের জন্য দোয়া রাখবেন। আপনাদের জন্য রইল পূর্ণ দোয়া ও আশীর্বাদ।
( প্রিয় পথপ্রদর্শক হতে উক্ত লাইন গুলো শুধু জুনিয়র ব্যাচমেটদের জন্য যারা বক্তব্য শেষে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলবে )
সম্মানিত সভাপতি, শিক্ষকঅভিভাবক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল শুভাকাঙ্খীদের কাছে আমাদের একান্ত চাওয়া। আপনারা আমাদের জন্য প্রাণ খুলে দোয়া রাখবেন। আমরা যেন অসফলতার সাথে আমাদের লক্ষ্যে এভারেস্ট জয় করতে পারি । আমরা যেন পৃথিবীর আলোকিত মানুষ হতে পারি। পরিবারের সম্মুখ সমুজ্জ্বল করতে পারি। সর্বোপরি দেশ ও দশের সহযোগিতায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারি।
পরিশেষে সকলের প্রতি রইল আমার বিদায় সালাম। আসসালামুআলাইকুম।