উৎসব

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা

আজকের এই অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা আলোচনা করব। তাই আপনারা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস এর কিছু কথা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস অনুসন্ধান করে আমার এই অনুচ্ছেদে এসেছেন তাদের সকলকে স্বাগতম। স্বাধীনতা নামক সোনার হরিণটি বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে এবং পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা অর্জিত হয় 1971 সালে 16 ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের মাধ্যমে। আমরা আমাদের প্রায় 30 লক্ষ শহীদ এবং দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তাই এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে আমরা জীবন দিয়ে রক্ষা করব। আমরা এই অনুসারে স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা আপনাদের জন্য শেয়ার করার চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কত তারিখে

১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পশ্চিম পাকিস্তানীরা। ওই দিন রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই থেকে ২৬ শে মার্চ কে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এবং ১৬ই ডিসেম্বর কে বাংলাদেশের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।

স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা

১৯৭১ সালের 7 শে মার্চ ঢাকার রমনা রেসকোর্সে এক ঐতিহাসিক ভাষণে আওয়ামী লীগের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে নয় মাসব্যাপী যুদ্ধ শুরু হয়, যা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়। সেদিন বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

প্রতি বছর, বাংলাদেশ মহান উদ্দীপনা ও দেশপ্রেমের সাথে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে। দিবসটি সারাদেশে কুচকাওয়াজ, পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। লোকেরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে, জাতীয় পতাকার রঙে তাদের মুখ রাঙিয়ে দেয় এবং দেশাত্মবোধক গান গায়। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা”ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাজানো হয়।

Related Articles

স্বাধীনতা দিবস বাংলাদেশে একটি সরকারি ছুটির দিন এবং সরকারি ও বেসরকারি অফিস, স্কুল এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এই দিনে দেশের স্বাধীনতার তাৎপর্য এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের ওপর জোর দিয়ে ভাষণ দেন। এটি বাংলাদেশিদের জন্য তাদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে স্মরণ করার এবং দেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য উদযাপন করার একটি দিন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস

স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল 1971 সালে 26 শে মার্চ আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা অর্জিত হয় ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ কে দুইটি ভাগে ভাগ করে যায়। একটি হলো হিন্দুস্তান এবং অন্যটি হলো পাকিস্তান। হিন্দুস্তান বর্তমান ভারত একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানের দুইটি অংশ নিয়ে গঠিত হয় একটি হলো পূর্ব পাকিস্তান অপটি পশ্চিম পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তান বলতে বর্তমান বাংলাদেশকে এবং পশ্চিম পাকিস্তান বলতে বর্তমান পাকিস্তান কে পৌঁছানো হয়। পাকিস্তান ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টে স্বাধীনতা লাভ করলেও পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করতে পারেনি। ১৯৪৭ এর পর থেকে পশ্চিম পাকিস্তান বিভিন্নভাবে পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাঙ্গালীদের উপর অন্যায় অত্যাচার এবং নিপূরণ শুরু করে। তারা প্রথমে আঘাত করে বাংলার ভাষা এবং সংস্কৃতির উপর। তারা এদেশের মানুষের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা সহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনী পূরণ চালাত। বাংলাদেশের ভোটাধিকার সহ সংবিধান প্রেরণ করতে বিলম্ব করেছিল। এতদিনানা কারণে বাংলাদেশের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রের উপর বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করে। এর ফল পরে ১৯৭০ সালে নির্বাচনে। ৭০ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে জয়লাভ করল পশ্চিম পাকিস্তানিরা সে সময় আমাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। তারা ক্ষমতা হস্তান্ত না করে এদেশের মানুষের উপর অন্যায় নিপূরণ এবং গণহত্যা চালায়।

1971 সালে 26 মার্চ এ দেশের জনগণের প্রাণপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে এবং এ দেশের জনগণের উপর অপারেশন সার্চলাইট নামে গণহত্যা চালাতে শুরু করে। বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঐদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে এ দেশের মানুষ সশস্ত্র সংগ্রামী ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তকে সংগ্রামের পর মুক্তিবাহিনী এবং ভারতের মিত্রবাহিনীর কাছে পশ্চিম পাকিস্তানি বাহিনী আত্ম-সমর্পণ করে এবং 16 ডিসেম্বর বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা অর্জিত হয় বিজয় দিবসের মাধ্যমে। এভাবে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *